
মিথ্যা অভিযোগের আতঙ্কে ডিপিডিসি কর্মকর্তারা, কার্যক্রমে স্থবিরতা
ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড (ডিপিডিসি) — দেশের অন্যতম স্বনামধন্য বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান — বর্তমানে চরম অস্থিরতা ও আতঙ্কের মধ্য দিয়ে দিন কাটাচ্ছে। একের পর এক মিথ্যা ও বেনামী অভিযোগে জর্জরিত হচ্ছেন এই প্রতিষ্ঠানের সৎ ও দায়িত্ববান কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ডিপিডিসির একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানে একটি গোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে উঠেছে, যারা অন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ দাখিল করছে। অভিযোগগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এর ফলে গ্রাহক সেবার মতো মৌলিক কাজ ব্যাহত হচ্ছে, আর প্রতিষ্ঠানটি দিন দিন গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে।
একজন অবসরপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “অবসরের পরও আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া হচ্ছে। এই মানসিক যন্ত্রণা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না।”
ডিপিডিসির এক নির্বাহী পরিচালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “এখানে চাকরি করা এখন আত্মসম্মান বিসর্জন দেওয়ার সমান। নিজের সততার প্রমাণ দিতে দিতে আমরা ক্লান্ত।”
সূত্র মতে, প্রতিষ্ঠানটির ৬-৭ জন প্রভাবশালী কর্মকর্তা পুরো ডিপিডিসিতে একপ্রকার আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। তারা প্রকৃত দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে, উল্টো নিরপরাধ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেই নানা মন্ত্রণালয় ও দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) অভিযোগ দাখিল করছে।
দুদকের একজন উপ-পরিচালক বলেন, “বাংলাদেশে বিদ্যুৎ বিতরণকারী অনেক প্রতিষ্ঠান আছে, তবে ডিপিডিসির মতো এত অভিযোগ আর কোথাও আমরা পাই না। আমাদেরও বিভ্রান্তিতে ফেলছে এ পরিস্থিতি।”
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা মন্তব্য করেন, “ডিপিডিসির কিছু কর্মকর্তার জন্য পুরো প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এটি দুঃখজনক।”
এখন সময় এসেছে প্রকৃত দুর্নীতিবাজদের চিহ্নিত করে তাদের বিচারের আওতায় আনা এবং নিরপরাধ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হয়রানি বন্ধ করার। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা না নিলে, বিদ্যুৎখাতের অন্যতম এই প্রতিষ্ঠান আরও গভীর সংকটে নিপতিত হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।