
প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের ফর্মুলা দিয়েছে বিএনপি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের রোববারের ১১তম দিনের সংলাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের ফর্মুলা দিয়েছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ এ ফর্মুলা সংলাপের পর সংবাদমাধ্যমে সামনে তুলে ধরেন।
বিএনপির ফর্মুলা অনুযায়ী, সংসদ বিলুপ্তির ৩০ দিন আগে সংসদে প্রতিনিধিত্বকারী দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় একজন উপযুক্ত ব্যক্তিকে প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগ দেবেন রাষ্ট্রপতি। এ পদ্ধতি সফল না হলে, বিএনপির ফর্মুলার দ্বিতীয় প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার এবং বিরোধীদলীয় ডেপুটি স্পিকারের সমন্বয়ে গঠিত সার্চ প্রধান উপদেষ্টা পদে একজন উপযুক্ত ব্যক্তিকে বাছাই করবে। রাষ্ট্রপতি এই কমিটির সভায় সভাপতিত্ব করতে পারবেন, কিন্তু ভোট দিতে পারবেন না।
এই পদ্ধতিতে কাউকে পাওয়া না গেলে, ফর্মুলার তৃতীয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার, বিরোধীদলীয় ডেপুটি স্পিকার, তৃতীয় বৃহত্তম দলের প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত সার্চ কমিটি প্রধান উপদেষ্টা বাছাই করবে। তবে এ কমিটিতে রাষ্ট্রপতির ভোট দেওয়ার এখতিয়ার থাকবে।
এ পদ্ধতিতেও কাউকে পাওয়া না গেলে, বিএনপির ফর্মুলার চতুর্থ প্রস্তাব অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার এবং প্রধান বিরোধীদল বাদে সংসদ নির্বাচনে অন্তত পাঁচ শতাংশ ভোট পাওয়া প্রত্যেক দলের একজন করে প্রতিনিধি নিয়ে গঠিত কমিটি প্রধান উপদেষ্টা বাছাই করবে। এ কমিটিতেও রাষ্ট্রপতির ভোট দেওয়ার এখতিয়ার থাকবে। যদিও এ কমিটি থেকে বিরোধীদলীয় ডেপুটি স্পিকারকে রাখার প্রস্তাব করেনি বিএনপি।
এভাবে প্রধান উপদেষ্টা পদে কাউকে বাছাইয়ে ঐকমত্য না হলে, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিদের মধ্যে যাদের বয়স ৭৫ বছরের কম, তাদের একজন নিয়োগের সুপারিশ করবে সার্চ কমিটি। ফর্মুলার দ্বিতীয় প্রস্তাব অনুযায়ী, এ কমিটির সদস্য হবেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেতা, স্পিকার এবং বিরোধীদলীয় ডেপুটি স্পিকার।
বিএনপির ফর্মুলায়, যে তিনটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব রয়েছে সবগুলোতেই হয় সরকারি দলের সমতা থাকবে কিংবা সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে। দ্বিতীয় প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রী ও স্পিকার হবেন সরকারি দলের। বিরোধীদলীয় নেতা এবং ডেপুটি স্পিকার। তৃতীয় প্রস্তাবে তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন প্রতনিধিকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আবার রাষ্ট্রপতিকেও ভোটাধিকার দেওয়া হবে। ফলে তিনি তিন সমতার সম্ভাবনা রয়েছে। চতুর্থ প্রস্তাবে, বিরোধীদলীয় ডেপুটি স্পিকারকে না রাখা এবং রাষ্ট্রপতিকে ভোটাধিকার দেওয়ায়, সরকারি পক্ষের সমতা বা সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে।
তাহলে কীভাবে প্রধান উপদেষ্টা বাছাই হবে- এ প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, কমিটির মাধ্যমে বাছাই সম্ভব না হলে, যদি সংলাপে ঐকমত্য হয় তবে সর্বশেষ পন্থা হিসেবে কোনো সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান বা রাষ্ট্রপতিকে দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, অতীত অভিজ্ঞতা এবং বিচার বিভাগকে প্রভাবমুক্ত রাখাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে বিচারপতিদের নিয়োগে রাজি নয় অনেক দল। বিএনপিও মনে করে, বিচার বিভাগকে না রাখাই ভালো। তবে এর জন্য কয়েকটি বিকল্প প্রস্তাবও থাকতে হবে। কমিশন এবং অন্যান্য দলের ফর্মুলা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।