
নিকলী বেয়াতিরচর দাখিল মাদরাসার সুপারের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ সহ নানা অভিযোগ
নিকলীতে মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে মাদরাসার অবকাঠামো উন্নয়নে দুর্নীতি,সরকারি বাজেটের টাকা আত্মসাৎ, নিয়োগ বাণিজ্য,স্বেচ্ছাচারিতা,কর্মচারীদের সাথে অসাদাচারণ সহ বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলার গুরুই ইউনিয়নের বেয়াতিরচর দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা আঃকাইয়ুমের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তোলেন মাদরাসার লাইব্রেরিয়ান শিক্ষক মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমান সহ আরো কয়েক শিক্ষক। অভিযোগ রয়েছে গত ৫ আগস্ট থেকে তিনি নিয়মিত মাদরাসায় আসেন না।দীর্ঘদিন একই প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালনের কারনে মাদরাসার আরো কথিত দুই শিক্ষকের সিন্ডিকেট করে একক কর্তৃত্ব কাটিয়ে লাইব্রেরিয়ান শিক্ষককে লিখিত ভাবে শূণ্যপদ দেখিয়ে গত ২ বছরের বেশি পছন্দের ব্যক্তিকে নিয়োগ দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন।অন্যদিকে মাদরাসার সুপার তাকে চাকুরিচ্যুত করেননি জানিয়ে বলেন গত ৫বছর ধরে লাইব্রেরীয়ান শিক্ষক মাহাবুব মাদরাসায় অনুপস্থিতি ছিলেন বলে দাবি করেন।কিন্তু একজন শিক্ষক ৫বছর অনুপস্থিতি থাকার কারনে লিখিত নোটিশ,কারণ দর্শানো সহ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডকে লিখিত অবগত করেননি বলে মাদরাসা সুপার স্বীকার করেন। মাদসারা সুপার আঃকাইয়ুম হোসাইনীর বিরুদ্ধে লাইব্রেরীয়ান পদে নিয়োগ,ভুয়া নাম দিয়ে অতিরিক্ত সরকারি বই উত্তোলন করে বই বিক্রি সহ অনৈতিক অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাদরাসা ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন লাইব্রেরীয়ান শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক মাহাবুবুর রহমান জানান,গত ৫বছর ধরে আমাকে ষড়যন্ত্র করে মাদরাসার লাইব্রেরীয়ান পদ থেকে বের করে দিয়েছে।আমার পদটি শূণ্য দেখিয়ে স্বজনপ্রীতি করে অন্য লোককে নিয়োগ দিয়েছে।মাদরাসার বই বিক্রি সহ নানা স্বেচ্ছাচারিতায় জড়িত এ সুপার।আমি সুস্থ তদন্তের মাধ্যমে তার বহিষ্কার ও আমার চাকুরি ফেরত চাই।গত ৫বছর ধরে চাকুরি হারিয়ে বেকারত্ব সংসার জীবনে অশান্তির সাগরে ডুবছি।
বছরের পর বছর ধরে তার অনিয়ম আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি যা ইচ্ছা তা করে যাচ্ছেন।মাদরাসা সেসব অভিযোগে উল্লেখে জানা যায়, মাদরাসা সুপার আঃ কাইয়ুম হোসাইনী সরকারি বাজেটের পাঁচ লাখ টাকা, মাদরাসার শিক্ষার্থীদের দাখিল পরীক্ষার রেজিষ্ট্রেশনের টাকা আত্মসাৎ এবং নিয়োগ বাণিজ্য করেছেন। এছাড়া মাদরাসার জিনিসপত্র নিজ বাড়িতে নিয়ে ব্যবহার, স্টোর রুম থেকে বই বিক্রি,বিগত বছরের সরকারী বরাদ্দ পাওয়া তার সঠিক স্টক রেজিট্রারী না করা, মিটিং না করে কমিটির সদস্যদের অগ্রীম সাক্ষর নেয়া,মাদরাসার আসবাপত্রের সঠিক হিসাব না রাখা, পুরোনো টিনসেট ঘর বিক্রি সহ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে।
ম্যানেজিং কমিটির সদস্য বাবলু জানান,মাদরাসা সুপার মাঝে মধ্যে এক ব্যক্তি দিয়ে বাসা থেকে সাক্ষর নেয় কিন্তু কি জন্য নেয় সেটা বলেনা।আমিও মুর্খ মানুষ লেখাপড়া নাই তার কারনে জানিনা। এদিকে লাইব্রেরি পদে মাহাবুবকে কমিটির সিদ্ধান্ত করে নিয়োগ দিয়েছেন কিন্তু চাকুরী থেকে বের করে দেয়ার বিষয়ে আমরা কমিটির সদস্যরা জানিনা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সুপার আঃকাইয়ুম সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,তিনি দীর্ঘদিন মাদরাসার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন।লাইব্রেরীয়ান শিক্ষকের অভিযোগ ভিত্তিহীন।তার পদে বহাল রয়েছে,তারপরেও কেন অভিযোগ করেছে জানিনা।তবে গত ৫বছর ধরে সে অনুপস্থিত থাকার কারনে শূণ্যপদ দেখিয়েছি।অনুপস্থিতি থাকার কারনে লিখিত কারণ দর্শনো,নোটিশ বা মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডকে জানিয়েছে কিনা জানতে চাইলে কোনটাই করেননি বলে স্বীকার করেন।তাহলে শূণ্যপদ কেন দেখালেন বললে তিনি কোন উত্তর দিতে পারেননি।মাদরাসার অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে ব্যয় সহ সরকারী বই বিক্রির অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি প্রতিবেদককে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো.আলতাফ হোসেন জানান,তিনি তদন্ত করে সত্যতা পেলে লিখিতভাবে বোর্ডকে জানিয়ে ব্যবস্থা নেবেন বলে প্রতিবেদককে জানান।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মাদরাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রেহেনা মজুমদার মুক্তির সাথে যোগাযোগ করে বক্তব্য পাওয়া যায়নি।অভিযোগে সুপারের দুর্নীতির কাজে সহযোগী হিসেবে মাদ্রাসার সুপারিন্টেন্ড বিএসসি গণিত শিক্ষক ফখর উদ্দিন,সহ সুপারিন্টেন্ডেন্ট মোবারক শাহের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সুপারসহ অন্যদের বিরুদ্ধ অভিযোগগুলো সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান অভিযোগকারী সহ সচেতন মহল।
বার্তা প্রেরক:
মাহমুদ আল আজাদ
নিকলী(কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
০১৮৬৮৭৩৬৯৪৫