
গোপালগঞ্জে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনে ঘুষ দাবির অভিযোগ, তদন্ত কমিটি গঠন
গোপালগঞ্জে জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংশোধন করতে গিয়ে জেলা নির্বাচন অফিসারের বিরুদ্ধে দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সচিব বরাবর ই-মেইলের মাধ্যমে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন দুই সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
অভিযোগকারী গোপালগঞ্জ পৌরসভার আরামবাগ এলাকার বাসিন্দা এবং প্রবাসফেরত মুদি ব্যবসায়ী মো. ইলিয়াছুর রহমান জানান, ২০২১ সালের শেষ দিকে সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরার পর নিজের জাতীয় পরিচয়পত্রে জন্মতারিখ ও নামের বানান সংশোধনের প্রয়োজন হয়। এই উদ্দেশ্যে তিনি গত এপ্রিলের মাঝামাঝি জেলা নির্বাচন অফিসে যান এবং অফিসার মো. মাহফুজুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
তার ভাষ্য অনুযায়ী, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখানোর পর নির্বাচন অফিসার বিষয়টিকে জটিল উল্লেখ করে দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। ইলিয়াছুর রহমান ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে পরে আবার দেখা করতে বলা হয়। পরে ৩ জুন জন্মসনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে পুনরায় গেলে আবারও ঘুষ দাবি করা হয়।
পরবর্তীতে ৪ জুন তিনি অনলাইনে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদন করেন (ক্রমিক নং: NIDCA19890341)। ১৮ জুন শুনানির পর ১৯ জুন তিনি অফিসে গেলে পুনরায় ঘুষ দাবি করা হয়, এবং দরদাম করে এক পর্যায়ে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকায় রাজি হন বলে জানান। তিনি সেই দিনের কথোপকথন মোবাইলে রেকর্ড করেন।
ইলিয়াছুর রহমান আরও জানান, বিষয়টি ২৪ জুন গোপালগঞ্জ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অফিসে অবহিত করলে সেখান থেকে কোনও সহযোগিতা পাননি। পরে ২৫ জুন তিনি নির্বাচন কমিশনের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ পাঠান।
এ বিষয়ে দুদক গোপালগঞ্জের উপসহকারী পরিচালক মো. আল-আমিন জানান, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হলেও সময়মতো সহযোগিতা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা নির্বাচন অফিসার মো. মাহফুজুর রহমান বলেন,
“বর্তমানে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে কণ্ঠ পরিবর্তন করে অনেক কিছু বানানো যায়। তাছাড়া ইলিয়াছুর রহমান প্রথম পাসপোর্ট অনুযায়ী ভোটার হয়েছেন এবং তার জাতীয় পরিচয়পত্রে বিদ্যমান তথ্য সঠিক। তিনি যে পরিবর্তন চেয়েছেন, সেটি ‘খ’ ক্যাটাগরির বাইরে পড়ে, তাই আবেদন বাতিল করা হয়েছে।”
বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের সচিব আকতার আহমেদ জানিয়েছেন,
“ঘটনার তদন্তে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।”