, বৃহস্পতিবার, ০৮ মে ২০২৫, ২৪ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
কক্সবাজার জেলা যুবলীগের ঝটিকা মিছিল ঝিনাইদহে ইসলাম ধর্ম অবমাননাকর পোস্ট দেওয়াই গুরুজি জ্যোতিষ সাঈদী নামে একজন গ্রেফতার গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য আবুল গ্রেফতার। গোয়ালন্দে ফাঁদে ফেলে নারীদের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলা খবিরের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন যশোরের দক্ষিণবঙ্গের বিখ্যাত আম বাজার খ্যাত : বেলতলায় আম বেচাকেনা শুরু নিকলীতে কৃষি জমির টপসয়েল কাটায় দুই লাখ টাকা জরিমানা টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে যুবককে কুপিয়ে হত্যা টেকনাফ যেন ইয়াবার মেলা সীমান্তে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের সময় নারী শিশু সহ আটক ৪৪ বরাদ্দের দুই বছর পরও চালু হয়নি ট্রেন, নোয়াখালীতে প্রতিবাদ

এক প্রবাসী ভাইয়ের কষ্ট কাহিনি

  • প্রকাশের সময় : ০২:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫
  • ৪৩ পড়া হয়েছে

কাশেম আলী। একসময় স্বপ্ন দেখেছিলেন সুখের সংসারের, ভালোবাসার মানুষ আলেয়ার সঙ্গে কাটাবেন সারাটি জীবন। কিন্তু নিয়তি তাকে নিয়ে খেলেছে নির্মম এক খেলা।

আলেয়াকে বিয়ে করার মাত্র পঁচিশ দিনের মাথায় পাড়ি জমিয়েছিলেন বাহরাইন, পরিবার ও প্রিয়জনদের জন্য ভালো কিছু করার স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু সেই প্রবাস জীবনে একদিন শুনলেন, তার হৃদয়ের রাণী আলেয়া তার আগের প্রেমিকের সাথে পালিয়ে গেছে।

সেই খবর শোনার পর থেকে কাশেম আলীর পৃথিবী যেন থমকে গেল। আলেয়াকে তিনি ভালোবেসেছিলেন মন-প্রাণ দিয়ে, অথচ সে তাকে ফেলে চলে গেলো। আলেয়ার প্রতি তার ভালোবাসা ছিল নিখাদ, কারণ সে-ই ছিল কাশেমের জীবনের প্রথম নারী, প্রথম ভালোবাসা।

আলেয়ার চলে যাওয়ার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে কাশেম আর দেশে ফেরেননি। একটানা ২৪ বছর কাটিয়ে দিলেন প্রবাসে, বুকের ভেতর চাপা কষ্ট আর বেদনার পাহাড় বয়ে নিয়ে।

কিন্তু ভাগ্য তাকে আর বেশিদিন সহ্য করলো না। মেডিকেল পরীক্ষায় আনফিট হয়ে বাধ্য হয়েই দেশে ফিরতে হলো। ভাবলেন, অন্তত দীর্ঘ প্রবাস জীবনের কষ্টার্জিত অর্থে এবার শান্তিতে বাকি জীবন কাটাবেন।

কিন্তু দেশে ফিরে যা দেখলেন, তাতে তার হৃদয়ের রক্তক্ষরণ হলো আরও তীব্রভাবে। মা-বাবা, ভাই-বোনেরা তার প্রবাস জীবনের সমস্ত উপার্জন শেষ করে ফেলেছে। তিনি শূন্য হাতে দাঁড়িয়ে রইলেন।

চার মাস বাড়িতে কাটালেন, তবে সেই বাড়িও তার জন্য হয়ে উঠল অচেনা। মান-অভিমান, কষ্টে-দুঃখে এক কাপড়ে বেরিয়ে গেলেন বাড়ি থেকে।

আজ সাড়ে পাঁচ বছর হয়ে গেছে তিনি পথে পথে ঘুরছেন। কোনো ঠিকানা নেই, আশ্রয় নেই, জীবন কেবল একমুঠো ভাতের আশায়। মাজারে মাজারে ঘুরে কাটান দিন। আজও হাঁটতে হাঁটতে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থেকে কুমিল্লা স্টেশনে এসে পৌঁছেছেন। গন্তব্য চট্টগ্রামের আমানত শাহ মাজার, শুনেছেন সেখানে দুই বেলা খাবার মেলে।

কাশেম আলীর জীবনের কাছে আর কোনো চাওয়া নেই। শুধু দুই বেলা ভাত পেলেই তিনি সুখী।

চোখ মুছতে মুছতে বললেন কাশেম, “আল্লাহ যেদিন ডেকে নেবে, সেদিন যেন এই মাজারেই শেষ নিঃশ্বাস ফেলতে পারি।”

পথের ধুলো আর জীবনের দুঃখ-কষ্ট বুকে নিয়ে কাশেম আলী হাঁটছেন অনন্ত গন্তব্যের পথে…#probashi #প্রবাসী

জনপ্রিয়

কক্সবাজার জেলা যুবলীগের ঝটিকা মিছিল

এক প্রবাসী ভাইয়ের কষ্ট কাহিনি

প্রকাশের সময় : ০২:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২০ মার্চ ২০২৫

কাশেম আলী। একসময় স্বপ্ন দেখেছিলেন সুখের সংসারের, ভালোবাসার মানুষ আলেয়ার সঙ্গে কাটাবেন সারাটি জীবন। কিন্তু নিয়তি তাকে নিয়ে খেলেছে নির্মম এক খেলা।

আলেয়াকে বিয়ে করার মাত্র পঁচিশ দিনের মাথায় পাড়ি জমিয়েছিলেন বাহরাইন, পরিবার ও প্রিয়জনদের জন্য ভালো কিছু করার স্বপ্ন নিয়ে। কিন্তু সেই প্রবাস জীবনে একদিন শুনলেন, তার হৃদয়ের রাণী আলেয়া তার আগের প্রেমিকের সাথে পালিয়ে গেছে।

সেই খবর শোনার পর থেকে কাশেম আলীর পৃথিবী যেন থমকে গেল। আলেয়াকে তিনি ভালোবেসেছিলেন মন-প্রাণ দিয়ে, অথচ সে তাকে ফেলে চলে গেলো। আলেয়ার প্রতি তার ভালোবাসা ছিল নিখাদ, কারণ সে-ই ছিল কাশেমের জীবনের প্রথম নারী, প্রথম ভালোবাসা।

আলেয়ার চলে যাওয়ার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে কাশেম আর দেশে ফেরেননি। একটানা ২৪ বছর কাটিয়ে দিলেন প্রবাসে, বুকের ভেতর চাপা কষ্ট আর বেদনার পাহাড় বয়ে নিয়ে।

কিন্তু ভাগ্য তাকে আর বেশিদিন সহ্য করলো না। মেডিকেল পরীক্ষায় আনফিট হয়ে বাধ্য হয়েই দেশে ফিরতে হলো। ভাবলেন, অন্তত দীর্ঘ প্রবাস জীবনের কষ্টার্জিত অর্থে এবার শান্তিতে বাকি জীবন কাটাবেন।

কিন্তু দেশে ফিরে যা দেখলেন, তাতে তার হৃদয়ের রক্তক্ষরণ হলো আরও তীব্রভাবে। মা-বাবা, ভাই-বোনেরা তার প্রবাস জীবনের সমস্ত উপার্জন শেষ করে ফেলেছে। তিনি শূন্য হাতে দাঁড়িয়ে রইলেন।

চার মাস বাড়িতে কাটালেন, তবে সেই বাড়িও তার জন্য হয়ে উঠল অচেনা। মান-অভিমান, কষ্টে-দুঃখে এক কাপড়ে বেরিয়ে গেলেন বাড়ি থেকে।

আজ সাড়ে পাঁচ বছর হয়ে গেছে তিনি পথে পথে ঘুরছেন। কোনো ঠিকানা নেই, আশ্রয় নেই, জীবন কেবল একমুঠো ভাতের আশায়। মাজারে মাজারে ঘুরে কাটান দিন। আজও হাঁটতে হাঁটতে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ থেকে কুমিল্লা স্টেশনে এসে পৌঁছেছেন। গন্তব্য চট্টগ্রামের আমানত শাহ মাজার, শুনেছেন সেখানে দুই বেলা খাবার মেলে।

কাশেম আলীর জীবনের কাছে আর কোনো চাওয়া নেই। শুধু দুই বেলা ভাত পেলেই তিনি সুখী।

চোখ মুছতে মুছতে বললেন কাশেম, “আল্লাহ যেদিন ডেকে নেবে, সেদিন যেন এই মাজারেই শেষ নিঃশ্বাস ফেলতে পারি।”

পথের ধুলো আর জীবনের দুঃখ-কষ্ট বুকে নিয়ে কাশেম আলী হাঁটছেন অনন্ত গন্তব্যের পথে…#probashi #প্রবাসী